কচ্ছপ ও কাঁকড়: ধৈর্য, পরিশ্রম ও হিংসার গল্প

 কচ্ছপ ও কাঁকড়: ধৈর্য, পরিশ্রম ও হিংসার গল্প


এক ছোট্ট পাহাড়ঘেরা গ্রামে, এক নদীর ধারে বাস করত দুই প্রতিবেশী—একজন কচ্ছপ, আর একজন কাঁকড়।

কচ্ছপ ছিল ধীর, শান্ত, পরিশ্রমী আর খুব ধৈর্যশীল। সে ছোট একটা বাগান করত, নিয়ম করে পানি দিত, যত্ন নিত। দিনে দিনে তার গাছ ফল ও ফুলে ভরে উঠত।
আর কাঁকড় ছিল একটু অলস আর ঈর্ষাকাতর। সে নিজের কাজ না করে সারাদিন কচ্ছপের দিকে তাকিয়ে ভাবত—
— “ওর এত গাছগাছালি কেন? ওর এত ফলফলাদি কেন? আমিও তো পারি!”
কিন্তু পার্থক্য ছিল—কচ্ছপ পরিশ্রম করত, আর কাঁকড় শুধু হিংসা করত।
একদিন কাঁকড় ঠিক করল, সে কচ্ছপের ক্ষতি করবে। গভীর রাতে সে কচ্ছপের বাগানে গিয়ে কাঁটা ছড়িয়ে দিল, পানি দেওয়ার ড্রাম ফুঁটিয়ে দিল আর গাছের শিকড়ে লবণ ছড়িয়ে দিল।
সকালে কচ্ছপ উঠেই দেখে তার বাগানটা শুকিয়ে যাচ্ছে। সে ব্যথিত হল, কিন্তু কারো দোষ না দিয়ে আবার নতুন করে কাজ শুরু করল।
সে বলল—
— “যদি ধৈর্য থাকে, তাহলে আবার সব শুরু করা যায়। একবার নয়, হাজারবার।”
কয়েকদিন পর এক প্রবল ঝড় এলো। নদীর পানি উঠে প্লাবনের মতো বয়ে গেল। সবাই দৌড়ে পালাল। কাঁকড় তো ছোট গর্তে থাকে—সে বেরুতে না পেরে ডুবে যেতে লাগল।
কচ্ছপ তখনও মাটির নিচে, নিজের খোলসের ভেতর আশ্রয় নিয়ে টিকে ছিল। ঝড় থেমে গেলে সে দেখে কাঁকড় জলে হাবুডুবু খাচ্ছে।
কচ্ছপ এগিয়ে গেল। তাকে খোলসের উপর তুলে তার জীবন বাঁচাল।
কাঁকড় লজ্জায় মাথা নিচু করে বলল—
— “আমি তোমার ক্ষতি করেছি, আর তুমি আমায় বাঁচালে! আমি এত হিংসুটে ছিলাম, তবুও তুমি আমার উপকার করলে?”
কচ্ছপ মৃদু হেসে বলল—
— “কারো খারাপ চাওয়া আমাদের ভালো হওয়া আটকাতে পারে না। আমি পরিশ্রমে বিশ্বাস করি, আর তুমি এখন থেকে শুরু করলেই পারো।”
কাঁকড় সেদিন থেকেই বদলে গেল। সে বুঝে গেল—হিংসা নয়, পরিশ্রমই সফলতার চাবিকাঠি।
গল্পের শিক্ষা:
হিংসার ফল কখনো মধুর হয় না।
অন্যের উন্নতি দেখে হিংসা নয়, অনুপ্রেরণা নিতে হয়।
কচ্ছপ ও কাঁকড়: ধৈর্য, পরিশ্রম ও হিংসার গল্প কচ্ছপ ও কাঁকড়: ধৈর্য, পরিশ্রম ও হিংসার গল্প Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ on April 30, 2025 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.